রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হওয়ার পরে ইসকন সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে চিন্ময় দাসকে সংগঠন থেকে জুলাই মাসে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে সংগঠনটি চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে সমাবেশের আয়োজন করে চিন্ময় দাসকে ইসকনের নেতা হিসেবে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।আর সেই সমাবেশে নিচের মনগড়া, ভুয়া ও বানোয়াট অভিযোগ করেন লম্পট চিন্ময়। এতে তিনি বলেন, তাকে নাকি বহিষ্কার করা হয়নি। এরপরই সারাদেশে শুরু হয় প্রতিবাদ ও নানান সমালোচনা। তখন পুনরায় তিনি তার বক্তব্য চেঞ্জ করেন। ইসকন বলেন, চিন্ময় দাস আমাদের নেতা নয়।
জানা গেছে, ভুঁইফোড় সংগঠন বানিয়ে যার নাম বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইসকনের আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা কার্যালয় (ইসকন ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড প্রোটেকশন অফিস-সিপিটি) সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। গত বছরের ৬ অক্টোবর ইসকনের যুক্তরাজ্যস্থ ইসকনের সিপিটি থেকে জারিকৃত এক চিঠিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা এখনও প্রত্যাহার হয়নি বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের (আইনি নাম চন্দন ধর) ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসকন ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড প্রোটেকশন অফিস।সিপিটির পরিচালক কমলেশ কৃষ্ণ দাস স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার ফলে চিন্ময় ইসকনের কোনো ব্যবস্থাপনা বা নেতৃত্বের পদে থাকতে পারবেন না। কোনো কীর্তনে নেতৃত্ব বা ক্লাস নিতে পারবেন না। প্রকাশ্যে শ্রীল প্রভুপদের কোনো পূজা আর্চনায় অংশ নিতে পারবেন না। ১৮ বছর বয়সের নিচে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন না। বাংলাদেশের ইসকনের কোর কমিটি এবং সিপিটির কোনো পদধারী ব্যক্তি ছাড়া ইসকনের কোনো সম্পত্তিতে রাত যাপন করতে পারবেন না। এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
চিন্ময় দাস নামে যাকে সংগঠনের নেতা বলে দাবি করা হচ্ছে, অথচ তার অস্তিত্ব তিন মাস আগেও ছিল না। তথাকথিত এই ভুঁইফোড় সংগঠন ইসকন ৫% সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করে মাত্র। অথচ কিছু লোক সব হিন্দুদের বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে- তারা নাকি সব সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে তথ্য বলে জানা যায়। যা বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে- ইসকন সনাতনদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এটি মূলত একটি সংগঠন।
দুশ্চরিত্র লম্পট ভারতীয় সেবা দাস চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করা নিয়ে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তার সমর্থকরা চালিয়েছে, এতে তার সন্ত্রাসী বাহিনীরা আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে সেই তাণ্ডবে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। অত্যন্ত মেধাবী নওমুসলিমদের প্রতিনিধিত্বকারী নিরীহ আইনজীবী ছিলেন সাইফুল আলিফ। এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব ইসকন নেতা চিন্ময় এবং তাদের প্রভু আওয়ামী লীগ কেই নিতে হবে।
রিউমার স্ক্যানার গতকাল বিশদভাবে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ফেইক নিউজগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরেছে। এতে দেখা যায়, এ পর্যন্ত প্রকাশিত চিন্ময় ও ইসকনের পক্ষ নিয়ে যত নিউজ হয়েছে তার নিরানব্বইভাগই মিথ্যা! শহীদ আলিফকে চিন্ময়ের আইনজীবী বানিয়ে ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা খবর প্রচার করে রীতিমতো আস্ফালন করেছে।
৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে অল্প সংখ্যক সনাতন এবং অন্যান্য ধর্মের যে ব্যক্তিরা আছেন তাদের গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত যে এই ধরনের একজন দুশ্চরিত্র সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসী সংগঠন। এই নেতা চিন্ময় প্রভুকে কি তারা তাদের নেতা হিসেবে স্বীকার করবেন? বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বী দেশের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছেন। তারা কি সরাসরি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষের পথ বেছে নেবেন। এই তথাকথিত ভুঁইফোড় সংগঠনের নেতারা এখন কোথায়?
পরিশেষে জাতির সামনে ইসকনকে একথা পানির মতো স্বচ্ছভাবে বলতে হবে যে- এই সন্ত্রাসী লম্পট চিন্ময় প্রভু তাদের সংগঠনের নেতা আছে না কি নাই?
Leave a Reply