গাজীপুরে এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা। এ ছাড়া সকালে ওই এলাকায় তিনজন পোশাক শ্রমিককে যাত্রীবাহী বাস চাপা দেয়ার জের ধরে উত্তেজিত শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এর জের ধরে আশপাশের অন্তত ১০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অবরোধের কারণে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। কারাগারে আটক থাকা সালমান এফ রহমানের মালিকাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের ওই প্রতিষ্ঠানে ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করেন। বেতন না পাওয়ায় ও কয়েক মাস ধরে কারখানায় পর্যাপ্ত কাজ না থাকায় সেখানকার শ্রমিকদের মধ্যে নানা শঙ্কা রয়েছে।
বেতন পেয়ে কাজে ফিরে যেতে চান তারা। শ্রমিক-কর্মচারীরা চাচ্ছেন কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকুক। তারা বলছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক না থাকলে কারখানায় কর্মরত ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক-কর্মচারীর পরিবার-পরিজন ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েক লাখ মানুষ অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে যাবে। বেতন পরিশোধের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দুপুরে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। এর ঘণ্টাখানেক পর আবারো তারা অবরোধ শুরু করেন।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর কাশিমপুর এলাকার পরিদর্শক রাজিব হোসেন জানান, বুধবার ভোরে পলাশ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস হামিম গ্রুপের একটি কারখানার কয়েকজন পোশাক শ্রমিককে চাপা দিলে তাদের মধ্যে তিনজন আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। অন্যদিকে, বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবি নিয়ে ফের মহাসড়কে নামেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা। মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। বিশৃঙ্খলা এড়াতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা মহাসড়কে টহল দিচ্ছে। এ ছাড়া শিল্প পুলিশ, মহানগর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
কাশিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন জানান, বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকরা অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ওই মহাসড়ক অবরোধ করে। কারখানা কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, বেক্সিমকো কারখানা ব্যাংক থেকে আর্থিক সাপোর্ট চেয়েছিলেন, ব্যাংক থেকে এক মাসের টাকা সাপোর্ট পাওয়া গেছে। আগামীকাল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হতে পারে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) রিয়াজ উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিষদের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ৫০ কোটি টাকা ঋণ দিবে। আর মালিক পক্ষ দিবে ১০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের এক মাসের বেতন ৬০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে। এমন আশ্বাস পেয়ে শ্রমিকরা ৪ ঘণ্টা পর মহাসড়ক থেকে সরে গেছে।
Leave a Reply